তথ্যপ্রযুক্তি

যেসব কারণে আপনার ফেসবুকের কন্টেন্ট ও ব্যবসায়িক পেইজ বন্ধ হতে পারে

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪
যেসব কারণে আপনার ফেসবুকের কন্টেন্ট ও ব্যবসায়িক পেইজ বন্ধ হতে পারে
বাংলাদেশে অনলাইনে কেনা-কাটা বেশ প্রচলিত। এরমধ্যে ফেসবুক হয়ে উঠেছে একটা গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। অনেকে শুধুমাত্র ফেসবুকের ওপর ভিত্তি করেই গড়ে তুলেছেন পণ্য কেনা-বেচার ব্যবসা। কিন্তু সম্প্রতি কয়েকটি ফেসবুক গ্রুপ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এমন গ্রুপ নির্ভর ব্যবসার ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। কিন্তু ফেসবুকে এরকম ব্যবসায়িক গ্রুপ বন্ধ হওয়ার কারণ কী? এই বিষয়টি অনেকের কাছেই অজানা।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাজধানী ঢাকার ফাবিহা হাসান মনিষা নামে একজন তরুণী ‘ফুড আপ্পি’ নামের একটি ফেসবুক পেজ চালু করেন গত তিন বছর আগে। এই পেজে তিনি তার বিভিন্ন ধরনের কন্টেন্ট তৈরি করে সেগুলো আপলোড করেন। এর মাধ্যমে তিনি বেশ জনপ্রিয়তাও অর্জন করেন। তিন বছরের মধ্যে তার পেজে ফলোয়ার দাঁড়ায় দেড় মিলিয়ন বা পনেরো লাখ। কিন্তু হঠাৎ করে গত ২৪ এপ্রিল তার এই পেজটি উধাও হয়ে যায় ফেসবুক থেকে। নানা চেষ্টা করেও তিনি এখনো পর্যন্ত তার ফেসবুক পেজটি আর খুঁজে পাননি।

একই নামে গত বৃহস্পতিবার নতুন একটি ফেসবুক পেজ চালু করে মিজ মনিষা লাইভে এসে জানান, ফেসবুকে কিছু ব্যক্তি তাদের পেইজে ফেইক কপিরাইট স্ট্রাইক দিয়েছিলেন। যে কারণে কর্তৃপক্ষ ফেসবুক থেকে তাদের পেজটা ডিজেবল করে দিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে এমন অনেক ব্যক্তিগত একাউন্ট ও পেইজ ‘ডিজেবল’ হয়ে গেছে। যারা শত চেষ্টা করেও তাদের একাউন্ট ফেরত আনতে পারছেন না।

যেসব কারণে বন্ধ বা ডিজেবল হয়ে যেতে পারে ফেসবুক আইডি বা ব্যবসায়িক পেইজ

বিবিসির প্রতিবেনে ফেসবুক আইডি বা ব্যবসায়িক পেইজ বন্ধ বা ডিজেবল হওয়ার বিষয়ে কিছু তথ্য দিয়েছে। চলুন জেনে নেয়া যাক কি কারণে ফেসবুক আইডি বা ব্যবসায়িক পেইজ বন্ধ বা ডিজেবল হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের জন্য মেটার স্পষ্ট করে বেশ কিছু নির্দেশনা রয়েছে। যেটিকে বলা হয় কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড গাইডলাইন। সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য ফেসবুকের কমিউনিটি গাইডলাইন ছয়টি ভাগে বিভক্ত। তা হচ্ছে,

১- সহিংসতা ও অপরাধমূলক কার্যকলাপ
২- নিরাপত্তা, 
৩- আপত্তিজনক কনটেন্ট
৪-সত্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা
৫- মেধাস্বত্ব (ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি)
৬- অনুরোধ ও সমাধান। কমিউনিটি স্টান্ডার্ডের মধ্যে ফেসবুক বা মেটা কর্তৃপক্ষ সহিংসতা, অপরাধ ও নিরাপত্তার বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়। 

আরও পড়ুন: টিকটক বিক্রি নিয়ে যা জানাল বাইটড্যান্স


কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড গাইডলাইনে বলা আছে

- ফেসবুকে কোনো প্রকার টেরোরিজম বা জঙ্গিবাদ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম চালানো যাবে না। অর্থাৎ আর্ন্তজাতিক সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত কোন ব্যক্তি বা সংগঠন সম্পর্কে কোনো পোস্ট করলে বা ছবি আপলোড করলে তা কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড ভায়োলেশন হিসেবে ধরা হবে। এবং রিপোর্ট করা মাত্রই আপলোড করা কন্টেন্টসহ পুরো ফেসবুক পেজ বা গ্রুপ রিমুভ হয়ে যাবে।

- আপত্তিজনক কনটেন্ট, হিংসাত্মক বক্তব্য, জাতি অথবা মানুষের ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ কিংবা শারীরিক অক্ষমতা নিয়ে সরাসরি আক্রমণ করলেও তা নিয়ে রিপোর্ট হলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয়। এক্ষেত্রে কখনো কখনো কয়েকদিনের জন্য পোস্ট বা কমেন্টস করা থেকে বিরত রাখা হয় অনেককে।

- ধর্ষণ, মরদেহ ও দুর্ঘটনার ছবি অথবা ভিডিও পোস্ট করলে, দুর্ঘটনা আগুন কিংবা রক্তপাতের ছবি দৃশ্য প্রচার করলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ওই আইডির বিরুদ্ধে ব্যভস্থা নেয়।

- শ্মশানে মরদেহ পোড়ানো, যে কোনো ধরনের নির্যাতন- শিশু যৌন নির্যাতন, নারী যৌন নির্যাতন, অপ্রাপ্ত বয়স্ক নির্যাতন, প্রাণী শিকার, প্রাণী হত্যা, প্রাণী জবাই, প্রাণীর ক্ষত বা কাটা দৃশ্যমান ছবি বা ভিডিও প্রচার কররেও আইডি বা ব্যবসায়িক পেইজ ডিজেবল হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আশিকুর রহমান বলেন, ফেসবুক তাদের নিয়ম নীতির বিষয়ে বেশ সতর্ক। এসব নীতিমালা ফলো করা না হলে কিংবা এসব বিষয়ে রিপোর্ট হলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ব্যক্তিগত আইডি, পেইজ বা গ্রুপ ডিজেবল হয়ে যাবে।