বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক বুধবার এক কর্মিসভায় বলেন, বিএনপি জনগণের দল, তাই দলের নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। কোনো নেতাকর্মী যদি এমন কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকে যা জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি করে, তবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাজধানীর রুপনগরে আয়োজিত থানা যুবদলের এক সভায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আমিনুল হক নেতাকর্মীদের সতর্ক করে বলেন, আগামী নির্বাচনের আগ পর্যন্ত কোনো নেতাকর্মী যেন অফিস পরিচালনার চেষ্টা না করেন। তার মতে, বিএনপি গত ১৭ বছর ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে, যেখানে কোনো অফিস প্রয়োজন হয়নি। তাছাড়া নিজস্ব প্রচারের উদ্দেশ্যে পোস্টার-ব্যানার ব্যবহারেরও অনুমতি নেই। এসব পদক্ষেপ দলের নির্দেশনা মেনেই নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা হচ্ছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা, স্বাধীন বিচার বিভাগ, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, এবং নাগরিকদের স্বাধীন চলাচল। এ দাবি পূরণের দায়িত্ব বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের। বিএনপি তাদের এই কাজের জন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছে। তবে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আমিনুল হক বলেন, অবিলম্বে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা উচিত, যাতে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়।
বিশেষ অতিথি হিসেবে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের আহ্বায়ক শরীফ উদ্দীন জুয়েল আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বলেন, বিএনপি তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে থাকবে এবং কোনো অবস্থাতেই গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে ছাড় দেবে না। গত ১৬ বছরে বিএনপির অনেক কর্মী প্রাণ দিয়েছেন, এবং তারা এখনও আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
সভায় যুবদলের কর্মীদের জনগণের সেবামূলক কাজে সম্পৃক্ত থাকার তাগিদ দেন শরীফ উদ্দীন। তিনি বলেন, বিএনপির কর্মীদের জনগণের অসন্তুষ্টির কারণ হয়ে উঠবে এমন কোনো কাজ করা উচিত নয়।
মহানগর উত্তর যুবদলের সদস্য সচিব সাজ্জাদুল মিরাজ দলের শৃঙ্খলা বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, দলকে শক্তিশালী করতে ঐক্য অপরিহার্য। নেতাকর্মীদের দলীয় শৃঙ্খলা মেনে এগিয়ে চলার আহ্বান জানান তিনি।
রুপনগর থানা যুবদল ৬ নম্বর আঞ্চলিক ওয়ার্ডের উদ্যোগে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন মো. সালাউদ্দিন। যৌথ সঞ্চালনা করেন থানা যুবদলের আহ্বায়ক সোয়েব খান এবং সদস্য সচিব হাদিউল ইসলাম রাজিব। এতে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, এবিএমএ রাজ্জাক, যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম স্বপন, তসলিম আহসান মাসুম, আবুল হাসান টিটু, মহিলা দল ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট রুনা লায়লা, মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক সদস্য মাহাবুব আলম মন্টু এবং রুপনগর থানা বিএনপির আহ্বায়ক জহিরুল হক প্রমুখ।
আনন্দ মিছিল: ঢাকা মহানগর উত্তরের নবগঠিত বিএনপি কমিটির নেতাদের স্বাগত জানাতে রাজধানীর উত্তরা এলাকায় একটি আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এ মিছিল উত্তরা ফ্রেন্ডস ক্লাব মাঠ থেকে শুরু হয়ে রাজলক্ষ্মী, আজিমপুর, এবং মুগ্ধ চত্বরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সমাবেশে পরিণত হয়। এতে মহানগর উত্তরের শ্রমিক দল ও যুবদলের বিভিন্ন শাখার নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
এদিকে, ৪ নভেম্বর আমিনুল হককে আহ্বায়ক এবং মোস্তফা জামানকে সদস্য সচিব করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির একটি ছয় সদস্যের আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এস এম জাহাঙ্গীর, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি ও আব্দুর রাজ্জাক (দপ্তর) অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। এর আগে, ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর উত্তরের দুই সদস্যের আংশিক আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছিল।
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বিএনপি আশা করছে, তারা ঢাকায় শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধভাবে সংগঠিত হয়ে আগামী দিনের আন্দোলনে অংশ নিতে সক্ষম হবে।