রাজনীতি

অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে পথ চলতে চায় বিএনপি

উপ-সম্পাদক

উপ-সম্পাদক

রবিবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৪
অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে পথ চলতে চায় বিএনপি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) দেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে চায়। এ সরকারকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে দলটি সজাগ থাকবে। তবে নির্বাচনের জন্য যৌক্তিক সময় দেওয়া হলেও যথাসময়ে ভোটের আয়োজন না করা হলে বিএনপি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে আন্দোলনে নামবে। দলটি ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের মধ্য দিয়ে জনসংযোগ জোরদার করার পরিকল্পনা করছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক বৈঠকে দলের নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখলেও দলটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপের প্রত্যাশা করে। তার মতে, পুনর্গঠন ও সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া, এবং নির্বাচনের আয়োজন নিশ্চিত করতে সরকারের উচিত দ্রুত কাজ সম্পন্ন করা।
দলটির অভিমত, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনকালে বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের গুম-খুনসহ নানা অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছে, যা জনগণ ভালোভাবে দেখছে না। বিএনপির নেতাদের মতে, জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনই এই মুহূর্তে দেশের জন্য সবচেয়ে জরুরি। তারা দাবি করেন, গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে, যা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে। বিএনপির বিশ্বাস, তরুণ ভোটাররা এবার তাদের ভোটাধিকার ফিরে পেতে চায়।
স্থায়ী কমিটির এক নেতা আরও বলেন, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে, যা দেশের মর্যাদাকে আঘাত করে। তিনি মনে করেন, কিছু মহল পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগকে পুনরায় ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্র করছে। এ ধরনের চক্রান্তের বিরুদ্ধে সজাগ থাকার জন্য তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সরকারকেও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। বিএনপি দেশের স্বার্থে সরকারের পাশে থেকে কাজ করবে, কিন্তু জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থেকেও আন্দোলন চালাবে।
বিএনপি আশা করছে, অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন কমিশনসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করবে এবং দ্রুত একটি নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রকাশ করবে। অধিকাংশ রাজনৈতিক দলও চায়, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ শাসনের দায়িত্ব যেন জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। বিএনপির অভিমত, নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ১০ দিনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিএনপি। এই দিনটিকে সামনে রেখে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বড় পরিসরে সমাবেশ, র‌্যালি ও গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করা হবে। ৮ নভেম্বর ঢাকায় একটি বড় র‌্যালির আয়োজন করা হবে এবং একই সঙ্গে জেলা ও মহানগরে কর্মসূচির মাধ্যমে গণজাগরণ তৈরি করতে চায় দলটি। এ কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের মাঝে নির্বাচনের প্রতি আগ্রহ এবং ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিকে জোরালো করা হবে।
বিএনপি বিশ্বাস করে, জনগণ আর্থিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য দ্রুত নির্বাচনী ব্যবস্থা চায়। দলটি জনগণের সেই চাহিদাকে সম্মান জানিয়ে চলমান রাজনৈতিক মেরুকরণের প্রক্রিয়ায় নিজেদের ভূমিকা রাখবে এবং অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ থেকে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করবে।