রোববার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জনগণকে সড়ক অবরোধের মতো পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে সরকারের কাছে দাবি দাওয়া পেশ করা উচিত।
ড. ইউনূস বলেন, "আমরা ধৈর্য সহকারে আপনাদের কথা শুনতে চাই। কিন্তু সেজন্য সড়ক অবরোধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলে আমাদের সবার অসুবিধা হয়। আমাদের একান্ত অনুরোধ, আপনারা নির্দিষ্ট চ্যানেল মেইনটেইন করে আপনাদের দাবি দাওয়া পেশ করবেন।"
তিনি আরও বলেন, জনগণের মতামত এবং দাবির প্রতি বর্তমান সরকার সহানুভূতিশীল। ইতোমধ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের চাকরির বয়সসীমা ৩২ বছরে উন্নীত করার দাবি পূরণ করা হয়েছে।
নোবেলজয়ী এই সরকারপ্রধান স্বীকার করেন যে, দীর্ঘদিনের অপশাসন, অত্যাচার এবং বাকস্বাধীনতার অভাবে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয়েছে। তিনি বলেন, "আমরা জানি, আমাদের কাছে আপনাদের আরও অনেক দাবি-দাওয়া আছে। আমরা প্রতিটি দাবিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছি।"
জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের গুরুত্ব তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, "আমরা মনে করি না যে একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করলেই আমাদের দায়িত্ব শেষ। আমাদের লক্ষ্য শুধু নির্বাচন আয়োজন নয়; একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা এবং নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর।"
তিনি আরও বলেন, দৈনন্দিন প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় কাঠামো তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে বর্তমান সরকার।
ড. ইউনূস জানান, সরকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনায় বসছে এবং তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিচ্ছে। তিনি বলেন, "আমরা বিভিন্ন ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিচ্ছি। সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় এসব মতামত প্রতিফলিত হচ্ছে।"
সংস্কার প্রক্রিয়ার অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি বলেন, "সংস্কার কমিশনগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের সুপারিশ পেশ করবে। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ক্রমাগত আলোচনার মাধ্যমে এসব প্রস্তাব চূড়ান্ত করব।"
ড. ইউনূস তার ভাষণে জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং তাদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, "আমরা আপনাদের কথা শুনতে চাই এবং আপনাদের সাথে কাজ করতে চাই। তবে তা অবশ্যই নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে হওয়া উচিত।"