কৃষি ও প্রকৃতি

নাটোরে বস্তায় আদা চাষে লাভজনক হওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

স্টাফ রিপোর্টারঃ

স্টাফ রিপোর্টারঃ

মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৪
নাটোরে বস্তায় আদা চাষে লাভজনক হওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের
কম খরচে বেশি আয়ের আশায় পতিত জমিতে আদা চাষ শুরু করেছেন নাটোরের সিংড়া উপজেলার কৃষকরা।উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে কম-বেশি বস্তায় আদা চাষের আগ্রহ বাড়ছে। দিন দিন বেড়েই চলেছে বস্তায় আদা চাষ। অর্ধ শতাধিক কৃষক আদা চাষে এবার সফলতার মুখ দেখতে চান। 
সিংড়া উপজেলায় বর্তমানে কম-বেশি বস্তায় আদা চাষ হচ্ছে। কম খরচে আদা চাষের আগ্রহ বেড়েই চলেছে। বসতবাড়ি ও অন্য ফসলের সঙ্গে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বস্তায় আদা চাষ। কম খরচে উৎপাদন হওয়ায় খাদ্যের চাহিদা পূরণ করে বিপণন করা সম্ভব বলে আশা করছেন কৃষি বিভাগ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কৃষকদের মাঝে বাড়তি আয়ের জোগানে বাণিজ্যিকভাবে বাড়ছে বস্তায় আদা চাষ। বস্তায় আদা চাষের খরচ অনেক কম। ৫০-৬০  টাকা খরচ করে প্রতি বস্তা থেকে প্রায় ১-২ কেজি আদা পাওয়া যাবে। পরিবারের প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে বাড়তি লাভের আশায় বস্তায় আদা চাষ শুরু করেছেন অনেকে। সফলতা পেলে ভবিষ্যতে আদা চাষের পরিধি বাড়বে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
ডাহিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম ভেংড়ী, এলাকার যুবক রাজিব হোসেন বলেন, আমি আগে কখনো বস্তায় আদা চাষ করিনি। এবার  এক হাজার বস্তা আদা চাষ করছি। বাড়ির পাশে পতিত জায়গায় চাষ করলেও তেমন কোনো রোগবালাই দেখা দেয়নি। উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক পরামর্শে নিয়মিত আদা গাছ পরিচর্যা করে আসছি। তিনি জানান, আমার বড়ই বাগানের মধ্যে ১০ শতাংশ পতিত জমিতে দেশি জাতের এক হাজার বস্তায় আদা চাষ করেছি। এখন আদার কেজি ২৫০ টাকা। উত্তোলনের সময় ২০০ টাকা কেজি বাজার পেলে প্রায় ২ লাখ টাকার উপরে আদা বিক্রয় হবে। তাতে ব্যয়ের তুলনায় লাভ অনেক  বেশি হবে।ঐ গ্রামের বাসিন্দা মো. জহুরুল হোসেন জানান, বাড়ির পাশে পতিত জমিতে ১০০ বস্তায় এই প্রথম আদা চাষ শুরু করেছি। তার আশা এতে তিনি লাভবান হবেন।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. রয়েল বলেন, বস্তায় আদা চাষ করলে বাড়তি ফসলি জমি ও শ্রমের প্রয়োজন হয় না। বস্তায় মাটি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। মাটির সঙ্গে গোবর সার, খৈল, ছাইসহ রাসায়নিক সার মিশিয়ে কৃষকেরা পতিত জমি কাজে লাগিয়ে বস্তায় আদা চাষ করা যায়। বন্যার পানিতে অন্যত্র সরানো যায়। আমরা কৃষককে আদা চাষে উদ্বুদ্ধ করছি। সহায়তা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি।
সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার ফরিদ বলেন, উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নে ৬৬ জন কৃষক আদা চাষ করছেন। কৃষি বিভাগ সার ও কীটনাশক প্রদান করছে। কৃষকদের নতুন এ পদ্ধতিতে আদা চাষ করতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বাড়ির আশপাশের ছায়াযুক্ত জায়গা, বাগান, পতিত স্থানে সহজেই এ পদ্ধতিতে আদা চাষ করা যায়। বাজার ভালো থাকলে কৃষকরা অনেক বেশি লাভবান হবে।