বাংলাদেশের উন্নয়ন

দিনে খরচ ৩ কোটি টাকা সেখানে মেট্রোর মাসিক আয় মাত্র আড়াই কোটি টাকা!

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
দিনে খরচ ৩ কোটি টাকা সেখানে মেট্রোর মাসিক আয় মাত্র আড়াই কোটি  টাকা!

পেরিয়েছে মেট্রো রেলের ১ মাস! আয় মাত্র ২ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা! এটা কী লাভ নাকি লস?  

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের তথ্যমতে উদ্বোধনের পর কোম্পানিটি গত ১ মাসে প্রায় ৩ লাখ ৩৫ হাজার ট্রেন টিকেট বিক্রি করেছে। 

অর্থাৎ, উদ্বোধনের প্রথম মাসে মেট্রোরেল কতৃপক্ষ দৈনিক গড়ে আট লাখ ৫০ হাজার টাকার টিকেট বিক্রি করেছে। সেই হিসেব অনুযায়ী দৈনিক টিকেট বিক্রি হয়েছে প্রায় সাড়ে এগার হাজার। 

সব হিসেব কষে প্রথম ২৯ দিনে মেট্রোরেল আয় করেছে প্রায় ২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। গত মঙ্গলবার ঢাকা ম্যাস ট্রাঞ্জিটের এমডি এম এন সিদ্দিক এক সংবাদ সম্মেলনে এইসব তথ্য জানান।

এর আগে গত ২৮শে ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অনেকটা ঘটা করেই উদ্বোধন করা হয় দেশের প্রথম উড়াল রেল সড়ক প্রকল্প ঢাকা মেট্রোরেল।

তবে উদ্বোধনের দিন সর্বসাধারনের প্রবেশাধিকার বন্ধ ছিল। পরদিন ২৯ শে ডিসেম্বর থেকে দৈনিক কয়েক ঘন্টা করে আংশিক সার্ভিস দেওয়া শুরু করে মেট্রোরেল।

গনমাধ্যমের বিপুল প্রচরনা এবং দেশের প্রথম বিদ্যুতচালিত রেল হওয়াই প্রথমদিন থেকেই ছিল উপচে পড়া ভিড়। এমনকি মানুষ সারারাত ধরে দীর্ঘ লাইন দিয়ে  দাঁড়িয়ে থেকেও ট্রেনে উঠতে পারেনি। 

সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের হিসেব মতে, দেশের এক মাত্র এই মেট্রো সার্ভিসে প্রথম পাঁচ দিনেই টিকেট বিক্রি হয়েছিল ৪৬ লাখ ৮০ হাজার ৩০০ টাকার।   

এর মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে মেট্রোরেল চালুর প্রথম দিন তিন লাখ ৯৩ হাজার ৫২০ টাকা এবং দ্বিতীয় দিন মাত্র এক লাখ ৩৯ হাজার ৯৮০ টাকা আয় হয়েছিল। 

তবে এর পরবর্তী সময়গুলোতে ধীরে ধীরে আয়ের পরিমান বেড়েছে প্রতিষ্টানটির। তারা তৃতীয় দিন  প্রায়  ১২ লাখ ৩১ হাজার ৭১০ টাকার টিকিট বিক্রি করে।

চতুর্থ দিন বিক্রি হয় নয় লাখ ১৬ হাজার ৩৪০ টাকার টিকিট। প্রথম সপ্তাহের শেষ দিন মেট্রোরেল প্রায় ১০ লাখ ১৪ হাজার ৪১০ টাকার টিকেট বিক্রি করে।

তবে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হচ্ছে, এরপর থেকে মেট্রোরেলের আয় ব্যায়ের আর কোন হিসেব পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ পুরো এক মাসের সংক্ষিপ্ত এক হিসেব এসেছে গত ৩১ শে জানুয়ারি।  

এদিন এক মাসের আয়ের বিবরনী পাওয়া গেলে ও দেওয়া হয়নি গত এক মাসে রেল পরিচালনে ঠিক কত টাকা খরচ হলো সেটার কোনো বিবরনী! 

এর আগে একবার জানানো হয়েছিল এক মাস গেলেই বোঝা যাবে দৈনিক কত টাকা খরচ হচ্ছে মেট্রো রেল পরিচালনে। তবে ধারনা করা হচ্ছে, প্রকাশিত আয়ের পরিমান একেবারেই আশানুরুপ নয়। 

এর আগে গত ৯ই জানুয়ারি মেট্রোরেল কতৃপক্ষ এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিল তাদের রেল পরিচালনা করতে দৈনিক  কমপক্ষে ৩ কোটি টাকা আয় করতে হবে।  

অথচ পুরো এক মাসেই আয় করা সম্ভব হয়নি এই অর্থ। আয় ব্যায়ের এই পুর্বানুমানে এমন গড়মিলের কারন হিসেবে মুলত সম্পূর্ণ রুট চালু না হওয়াকেই দায়ী করা হচ্ছে। 

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন মেট্রোরেলের সম্পূর্ণ রুট চালু না হওয়া পর্যন্ত আয় কিংবা ব্যয়ের সঠিক হিসেব পাওয়া যাবেনা। 

তারা আশা করছেন- আসছে ডিসেম্বরে চালু হবে প্রকল্পের বাকী অংশ। প্রকল্প বাস্তবায়নে গৃহীত ঋণের অর্থ পরিশোধ এবং ঠিক ঠাক ভাবে মেট্রো সার্ভিস পরিচালনা করতে হলে ঢাকা ম্যাস ট্রাঞ্জিট কোম্পানিকে বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকা আয় করতে হবে। 

সরকার সংশ্লিষ্টদের দাবি পরিকল্পনা অনুযায়ী আগালে এই অর্থ তারা আয় করতে পারবে প্রতি বছর। বিশেষজ্ঞরা ও বলছেন দুর্নিতী মুক্তভাবে চললে অর্জিত হবে কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা।